উরিচ্ খুটান - বান্দনা পরব
উরিচ্ খুটান - বান্দনা পরব
আরো পড়ুন...
অমাবস্যার উরিচ্ গোট ( গরু গোট ) হয়ে যাওয়ার পর থেকে ধাঁগড়িয়া দল সারা রাত্রি ধরে গরু জাগানোর জন্য বেরান। প্রত্যেক বাড়ি বাড়ি ঘুরেন এবং নিজেদের গান ও বাজনার দ্বারা তৃপ্তি প্রদান করেন।
পরের দিন গরু গোয়াল পরিষ্কার করে গরুকে চান করিয়ে, শিঙে কচি ধানের মালা জড়িয়ে ধুমধাম করে গরু পূজা হয়।
তার পরের দিন হলো বান্দনা পরবের শেষ এবং আকর্ষক হিসেবে গরু খুটান অনুষ্ঠান দেখার জন্য সবাই জড়ো হন সেই যায়গায়।
সকাল থেকে চলে খুঁটি গাড়ার প্রস্তুতি, সাজানো। কেউ কেউ বাঁশগাছের খুঁটি ছাড়াও কলা গাছ পুঁতেন আরো আকর্ষক করে তোলার কারণে। খুঁটির মাথায় ছাতা ও ছাতার ধারে ধারে বিস্কুট, টাকার নোট, সুনুম পিঠা ( তেলে ছাকানো আটার পিঠে ) , এছাড়াও কিছু উপহার সামগ্রী ঝোলান ধাঁগড়িয়াদের জন্য।
উরিচ্ খুটান - বান্দনা পরব
ধীরে ধীরে বেলা গড়তে থাকে পশ্চিমে , শোনা যায় গ্রাম মোড়লের ঘরে ধাঁগড়িয়াদের বাজনা। পরে পরে গরু সাজিয়ে আনা হয় সেই খুঁটিতে আর কিছু কিছু দর্শক জমতে থাকে। চলে বোম ফাটানো।
এবার ধাঁগড়িয়া দল মোড়লের ঘরে কলাং ( হাঁড়িয়া) খাওয়া সম্পন্য করে পথ বাড়ান আসরের দিকে সাথে বাজনা ও তাদের গলায় গান, ততক্ষণে দর্শকে পরিপুর্ন।
অন্তিম সময় চলে আসে , সমস্ত দর্শক উৎসুক , কোন গরু কেমন দৃষ্টান্ত প্রদান করবে। গরুর মালিক এর তার কানে বলা বলি করেছে " এবারে গরু গুঁতবেই। কার গরু জানো, আমার গরু। "
ছোটো ছোটো বাচ্চারা এদিক-সেদিক বাজি ফটকা নিয়ে ছোটা-ছুটি করছে। ধাঁগড়িয়াগন গরুর সামনে সবাই দাঁড়িয়ে এক গলায় তাদের গান শুরু করলো কিছুক্ষণ গান করবে, গান শেষ হওয়া মাত্রই তাদের চেড়ে-পেটে বাজনা ও সাথে সাথে দুজন চামড়া নিয়ে গরুকে শিঙে ঠেকাচ্ছে এবং গরু সেই চামড়া কে গুঁতো মেরে সরিয়ে দিচ্ছে। সবাই উল্লাসে মজা নিচ্ছে। গরু মালিক খুব খুশি। এদিক সেদিক ফটকার আওয়াজ ।ধীরে ধীরে সমস্ত গরুকে এই ভাবে চামড়া দেওয়া হয় এবং অনুষ্ঠান সম্পুর্ন করা হয়।
কেমন লাগলো আমাদের এখানে কোড়া গ্রামের বান্দনা পরব। নিচে লিখতে ভুলবেন, আর যদি আপনার এরকম লেখা আছে আপনি পাঠাতে পারেন আমরা সেটা সবার সামনে তুলে ধরবো।